মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করি, পরিবারের গুরুজনদের সাথে কি আমার খাদ্যাভ্যাসে পার্থক্য রয়েছে? ভেবে-চিন্তে উত্তরটা দাঁড়ায় ‘হ্যাঁ’। এই জবাব পাওয়াটাই স্বাভাবিক কারণ বর্তমান বিশ্বের পরিবর্তনের যুগে প্রতিনিয়ত আমাদের মেনুতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন অনেক খাবার।
পেছনে ফিরে দেখি, গত কয়েক বছর যাবৎ আমারও জীবনযাত্রার মানে এসেছে বহুবিধ পরিবর্তন। ব্যস্তময় এই নগরজীবনে আমি এখন চাইলেও আগের মত বাসায় মায়ের হাতের সুস্বাদু খাবার খেতে পারিনা। ছোটবেলায় বাসায় বানানো সুস্বাদু রুটি, গোশত, মাছ ,সবজি কিংবা বিকেলবেলার মুখরোচক নাস্তার স্বাদ এখন খুঁজে পাওয়াও ভার। জিভে জল আনা সেইসব ঘরোয়াভাবে প্রস্তুতকৃত সিঙ্গারা,সামোসা তো দূরে থাক, খাবারে এখন অনেক সময় ভাতের বদলে খিচুড়ি, বিরিয়ানি চলে।
আজ আমার মত যান্ত্রিক জীবনযাত্রায় আবদ্ধ সবারই খাদ্যের বড় যোগানদাতা হচ্ছে রেস্তোরাঁ এবং স্ট্রীট ফুড শপগুলো। এখন পুরোনো দিনের খাবারগুলোর জায়গায় এসেছে নিত্যনতুন স্বাদের ফাস্টফুড। রোল, বার্গার থেকে শুরু করে আরও কত কি? পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন স্বাদের ফলের জুস। খাবারে বৈচিত্র এখন আগের থেকে অনেক বেশি। সেজন্য আমাদের পছন্দের খাবারে ভিন্নতাও বেড়েছে। আর আমাদের এগুলোই সম্বল কারণ বানানোর ঝামেলা নেই। বানানোই থাকে। স্বাদেও মন্দ নয়। তবে যদি মায়ের হাতের স্বাদের নিশ্চয়তা কিংবা পুষ্টিগুণের কথা মাথায় রাখতে চান সেটা কিন্তু সবসময় পূরণ হবার নয়।
কিন্তু আমি একটু নাছোড়বান্দাই বটে। ছোটবেলার মায়ের তৈরি সেই সুস্বাদু খাবার আমাকে এখনো নস্টালজিক করে রেখেছে। সেই রেঁস্তোরা কিংবা ফাস্টফুড আমাকে খুব একটা টানে না। তাই আমাকেও ক্ষুধা-তৃপ্তির জন্য বেছে নিতে হয়েছে ভিন্ন পন্থা। বাজারে এখন পাওয়া যায় ফ্রোজেন পরোটা, সিঙ্গারা, সামোসা কিংবা পুরি। আমি ওগুলোর ওপরই ভরসা করি। এক্ষত্রে আমার পছন্দ ডেলিফ্রস্টের ফ্রোজেন আইটেমগুলো। বাসায় প্রস্তুতিতে ঝামেলা নেই। ঝটপট বানিয়ে খেয়ে ফেলি অথবা সঙ্গে করে নিয়ে যাই বাইরে। আহ, খেতে মন্দ নয়। নিজে খাই, মাঝে সাঝে বন্ধুদেরও শেয়ার করি।
মায়ের হাতের রান্না যদিও নয় তবুও স্বাদে-পুষ্টিতে পুরোনো সেই ঘরোয়া রান্নার কথাই মনে করিয়ে দেয় ডেলিফ্রস্ট ।